ভূমিকা ও প্রথম পর্ব | দ্বিতীয় পর্ব
পৃষ্ঠা ৯ এর মাঝামাঝি শায়খ (আল্লাহ্ তা’আলা উনাকে মাফ করুন) উল্লেখ করেছেন,
“ইরাকে প্রতিরোধ যোদ্ধা বা শিয়া-সুন্নি সঙ্ঘাতে লিপ্ত বিভিন্ন দল নিরস্ত্র অযোদ্ধা মানুষদের হত্যা করলে তাকে সকলেই সন্ত্রাস বলে গণ্য করেন। কিন্তু মার্কিন বাহিনী ফালুজা এবং অন্যান্য স্থানে অযোদ্ধা নিরস্ত্র মানুষদেরকে হত্যা করলে তাকে সন্ত্রাস বলে কখনোই স্বীকার করা হয় না।”
.
প্রথমত, ২০০৩ সালে মার্কিন-ন্যাটো জোট বিনা উস্কানিতে ইরাক আক্রমণ করে। এর পেছনে কোনো প্রকার ‘জঙ্গিবাদী’ উস্কানি ছিল না। সাদ্দাম হোসেন পরবর্তী সময়ে রাফেজি দালাল নুরি আল মালিকিকে ক্ষমতায় বসায় মারকিন-ন্যাটো নীতিনির্ধারকরা যাদের নির্দেশে ইরাকের আহলুস সুন্নাহ ও মুজাহিদিনদের উপর আগ্রাসন চালায় রাফেজি সৈন্যবিশিষ্ট ইরাকি আর্মি।
ইরাকের যুদ্ধ ছিল মার্কিন-ন্যাটো জোট ও তাদের সৃষ্ট পুতুল ইরাকি আর্মির বিরুদ্ধে। এটা কখনোই নিছক ‘শিয়া-সুন্নি সংঘাত’ ছিল না। উনি নিজেও ইতোঃপূর্বে ইরাকে আমেরিকার আগ্রাসনের কথা উল্লেখ করেছেন! কি নিদারুণ স্ববিরোধীতা!
“তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর।”
– সুরা আন-নামল, ২৭ঃ৬৪
ডক্টর খন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর মুসলমানদের রক্তের ব্যাপারে চরম ঔদাসিন্য দেখিয়েছেন। যদি উনার জানার সল্পতা থাকত উনি কেন এটা লিখতে গেলেন? আর যদি জেনেশুনে এভাবে নিহত মুসলমান ও সম্ভ্রমহারা বোনদের গায়ে এমন অপবাদ দিয়ে থাকেন তবে আল্লাহ্ তা’আলা যেন উনার ফয়সালা তদানুজায়ী করেন।
সুবহান’আল্লাহ! ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের ফলে নিহত হয় দশ লক্ষাধিক নিরীহ বেসামরিক মানুষ। মাহমুদিয়া গ্রামে ১৪ বছরের বোন আবির আল জানাবি (রাহিমাহুল্লাহ) কে ধর্ষণের পর গোটা পরিবারসহ জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনা জানে না এমন কে আছে? বিশেষ করে দুনিয়ার এত খবর রাখা, বৈশ্বিক ‘জঙ্গিবাদের’ উপর বই লেখা একজন ব্যাক্তি তা জানবে না এটা কিভাবে সম্ভব??
এত কিছুর পরও উনি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, কোনো মানুষ বা মানবগোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে চিহ্নিত করা খুবই কঠিন। (লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ)
তবে উনার কাছে কঠিন মনে হলেও পরবর্তীতে উনি সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করেছেন এবং তাদের উপর পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখে গিয়েছেন।
অথচ লক্ষ লক্ষ মুসলমানের রক্ত ঝরানো, আবু গারিব কারাগারে সম্ভ্রান্ত-রক্ষনশীল মুসলিম বোনদের দৈনিক দশবার ধর্ষণ করা সত্ত্বেও উনি আমেরিকানদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করাকে খুবই কঠিন মনে করছেন।
জঙ্গি-সন্ত্রাসী শব্দের স্বরূপ উদ্ঘাটনের চেস্টায় যদিও তিনি দেখিয়েছেন কাউকে ‘সন্ত্রাসী’ বা ‘জঙ্গি’ আখ্যায়িত করাটা কঠিন; তথাপি তিনি হঠাৎ করেই যেন জঙ্গি কারা তা খুজে পেয়েছিলেন এবং পরবর্তী পরিচ্ছদগুলোতে অবলীলায় ‘জঙ্গি’ শব্দের ব্যবহার করেছেন।