পিডিএফ ডাউনলোড করুন
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন
শায়খ আবু কাতাদা আল ফিলিস্তিনি
মাদখালি-মুরজিয়াদের একটি মারাত্মক সংশয়ঃ
“সালাফরা মুতাজিলা শাসকদের তাকফির করেন নি,তাই আল্লাহ’র আইন প্রত্যাখ্যানকারীদেরকেও তাকফির করা যাবে না।”
খাওয়ারিজদের একটি মারাত্মক সংশয়ঃ
“কোনো প্রকার কুফরে আকবার পেলেই তাউইয়িল বা ব্যাখ্যার সুযোগকে অগ্রাহ্য করে ঢালাও তাকফির করতে হবে।”
নিরসনঃ
“ইমামদের বক্তব্যগুলোর পর্যালোচনার মাধ্যমে দুই শ্রেণীর ব্যক্তিদের মাঝে পার্থক্য স্পষ্ট হয়:
এক. ঐ সকল ব্যক্তি, যাদের উদ্দেশ্য ছিল আল্লাহর রাসূল সা: এর অনুসরণ করা, কিন্তু তারা পথ চিনতে ভুল করেছে, ফলে সঠিক উদ্দেশ্যে পৌঁছতে পারেনি।
দুই. ঐ সকল ব্যক্তি, যারা আল্লাহর রাসূল সা: এর আনিত আদর্শের বিরোধিতায় লিপ্ত। তার আদেশের কোন মূল্যায়নই করে না। তার আনিত আদর্শকে তাচ্ছিল্য ও অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখে।
তাদের উদ্দেশ্যই হল শত্রুতা করা ও মুখ ফিরিয়ে নেওয়া। যখন তাদের কোন ঘটনা ঘটে, তখন এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সা: এর কি আদেশ আছে, তার প্রতি সামান্যও দৃষ্টিপাত করে না।
এমন ব্যক্তিরা যদিও ইসলামের কালিমা- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ মুখে বলে না কেন, কিন্তু তারা আল্লাহর সৃষ্টিজীবের মধ্যে নিকৃষ্ট কাফের, তার দ্বীন থেকে সর্বাধিক দূরে অবস্থিত।
একারণেই তাদের অনেকে আল্লাহর আইন পরিবর্তনকারী শাসকদেরকে তাকফীর না করার ব্যাপারে এই প্রমাণ দেয় যে, ইমাম আহমাদ রহ: খলীফা মামুন ও মু’তাসিমকে তাকফীর করতেন না, অথচ তার মতানুসারে তারা অনেক কুফরী কথা বলত।
যেমন কুরআনকে মাখলুক বলত, আল্লাহর আসমা ও সিফাতের ক্ষেত্রে জাহমিয়াদের মত কথা বলত।
অথচ এই দুই দলের মাঝে কতই না পার্থক্য!!!
এক দল সত্য পেতে চায়, কিন্তু তাতে ভুল করে। কিন্তু সে নিজের মাঝে এবং উম্মাতের মাঝে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বাস্তবায়ন করতে চায়।
আর আরেক দল ধর্মনিরপেক্ষতার পাতাকা উত্তোলন করে এবং মনে করে, আইন প্রণয়ন ও বিচারের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা’আলার কোন অধিকার নেই।
এছাড়া আপনার কাছে এই দুই গ্রুপের মাঝেও পার্থক্যও স্পষ্ট হয়ে গেছে, যাদের এক গ্রুপ হল যিন্দিক। যেমন ইসমাঈলীয়া, কারামাতিয়া, দারযিয়া এবং যারা এ যামানায় তাদের সাথে সাদৃশ্য রেখে বলে: কুরআন হল বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা বা কুরআন হল উপদেশগ্রন্থ; বিধান গ্রন্থ নয় বা সাহিত্যগ্রন্থ; পথপ্রদর্শনকারী গ্রন্থ নয়।
অথবা বলে নবী সা: এর আদেশ আমাদের উপর আবশ্যক নয়; এটা শুধু তার যামানার জন্য আবশ্যক ছিল। অথবা বলে যে, বর্তমানে আল্লাহর বিধানে উপকার হবে না এবং সমাজ সংস্কারে এর কোন মূল্য নেই।
আর আরেক গ্রুপ হল ঐ সকল তাওয়ীলকারীরা, যারা যদিও কুফরী কথা বলে, কিন্তু তারা তা কোন আয়াত বা হাদিসের তাওয়ীল করে বলে।
তারা রাসূলুল্লাহ সা: এর অনুগত্যই করতে চায়, কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
তাই তারা যদিও পথভ্রষ্ট, কুফরী কথা বলে, কিন্তু তাদের একেক জন সদস্যকে নির্দিষ্টভাবে তাকফীর করতে হলে অবশ্যই তার ক্ষেত্রে বিচারিক মূলনীতিসমূহ কার্যকর করতে হবে।
অর্থাৎ দেখতে হবে যে, সব শর্তগুলো পাওয়া যায় কি না এবং প্রতিবন্ধকগুলো শেষ হয়েছে কি না।
তথাপি এর অর্থ আদৌ এটা নয় যে, তাওয়ীলকারীদেরকে কখনো কিছুতেই তাকফীর করা যাবে না।
বরং কখনো এমন হতে পারে যে, কোন আলেম, গবেষক বা মুফতির দৃষ্টিতে একজন ব্যক্তির নাস্তিকতা ধরা পড়বে, কিন্তু একই কথা আরেক জন ব্যক্তি বলা সত্ত্বেও তার উপর কুফরের হুকুম আরোপ করা হবে না।
এটা কোন সাংঘর্ষিকতা বা বিরোধ নয়। যদিও যে এ ব্যাপারে জ্ঞান রাখে না, তার নিকট এটা বিরোধ ও সাংঘর্ষিকতাই মনে হবে।
– শায়খ আবু কাতাদা আল ফিলিস্তিনি হাফিঃ লিখিত أهل القبلة والمتأولون থেকে গৃহীত ।