শায়খ আবু কাতাদা আল ফিলিস্তিনি হাফিজাহুল্লাহ
প্রশ্নঃ
অনেক তরুণ (বিশেষত যাদের বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রে সরকারি ও এসব শাসনপন্থী আলেমদের সাথে সম্পর্ক/আন্তরিকতা রয়েছে তারা) বলে যে তোমাদের শায়খ আবু কাতাদা এমন অনেক বিষয় অবতারণা করেন যা আমাদের দেশের ‘আহলুল হল্ল ওয়াল আক্বদ’ তথা কর্তৃত্ববান আলেমদের প্রচলনের পরিপন্থী।
বিশেষত তাদের সাথে যখন কোন মাসআলা নিয়ে মতপার্থক্য হয় এবং তাকে দলীল প্রমান দিয়ে অনস্বীকার্য করে দিই। তৎক্ষণাৎ সে কথা ঘুরিয়ে ফেলার আশ্রয় গ্রহন করে ও বলে যে এই বক্তব্য আমাদের এই সময়কালের প্রসিদ্ধ পরিচিত উলামায়ে কিরামের ঐকমত্যের বিপরীত।
এই বিষয়ে আপনি কি বলেন?
*********
উত্তরঃ[1] সত্য কথাঃ আমার হাসি পায় যখন শুনি ‘আহলুল হল্ল ওয়াল আকদ’ বা কর্তৃত্বশীল উলামায়ে কিরাম! আসলে এগুলো এমন নামের বাহার যা বাস্তবতাশুন্য।
‘আহলে হল্ল ও আকদ’ হলো তারা, যাদের হাতে অনুমোদন ও স্থগিতকরণের ক্ষমতা রয়েছে, যারা নিজ সিদ্ধান্তে সুরাহা দিতে পারে এবং বাস্তবায়ন করতে পারে।
আর এসব শাসকপন্থী আলেমদের সিদ্ধান্ত প্রদান এবং বাধা দানের কী ক্ষমতা আছে? না বরং তারা-ই কোথাও বাঁধা থাকে, আবার কখনো তাদের খুলে দেয়া হয়।
এটাই এদের বাস্তবতা, তাগুত তাদেরকে থামতে বললে থামে, চলতে বললে চলে।
আর তারা যে পরিষদের আওতাভুক্ত নিজেদের বানিয়ে রেখেছে সেগুলো সরকার অনুমোদিত, যেমন মিসরে শায়খুল আযহার, তার মুল্যমান নষ্ট হয়ে পড়ে যখন তা রাষ্ট্রপ্রধানের তরফ থেকে নিয়োগ হতে লাগল।
তার আগে শায়খুল আযহার নির্ধারণ করতেন শীর্ষস্থানীয় উলামা কমিটি। তারা এই পদে সর্বাধিকযোগ্য ব্যক্তিকে নির্ধারণ করতেন, এখন মন্ত্রী বানানোর মত শায়খুল আযহার বানানো হয়।
এই কারনে বর্তমানে শায়খুল আযহার হলো আলী তানতাভি, যে তাগুতের পাদুকায় পরিণত হয়েছে এবং ধর্মের শত্রুদের মধ্যে পরিপূর্ণ আক্ষরিক অর্থে-ই সেও একজন শত্রু। আবার সে শায়খুল আযহারও বটে।
আর এই যে জাযীরাতুল আরবে (তথাকথিত সৌদি আরব) ‘হায়আতু কিবারিল উলামা’ বা উচ্চতর উলামা পরিষদ- তাগুত শাসক তাদেরকে নিয়োগ দেয়। তারা শাসক নিয়োগ করে বিষয়টা তা নয়, বরং তাগুত শাসকরা-ই তাদের নিয়োগ দেয়।
তাগুতের সংগঠিত কোন কিছু যখন তারা রদ করতে চায়, সে তখন তাদের গর্দান বধ করে দেয়। তাগুতের নির্দেশনার বিপরীত কিছু তারা করতে চাইলে তাদের হাত ঘাড়ের পিছনে বেধে দেয়া হয়। কিছুদিন পুর্বে তাদের কোন একজনকে বাদ করে দেয়া হয়। শায়খ আব্দুর রাজ্জাক রহঃ কে হায়আতু কিবারিল উলামা থেকে অপসারিত করা হয়, কারণ তিনি যাদের গোলাম এবং পাদুকা জুতা তাদের পক্ষ থেকেই নিয়োগ পেয়েছিলেন।[2] এটাই এদের বাস্তবতা।
আমরা যা বলি এটি যে এসব আলেমদের বিপরীত হয় সেটি আমাদের জন্য অভিনন্দনের বস্তু।
আমরা নিন্দিত হবো তখন, যদি আমাদের বক্তব্য আমাদের নির্ভরযোগ্য আয়িম্মায়ে মুজতাহিদীনের বিপরীত হয়, যদি আমরা বিপরীত বলি কিতাবুল্লাহ যা বলেছে, হাদিস শরীফে যা এসেছে, সাহাবায়ে কিরাম যা করেছেন, বিশ্বস্ত তাবেয়ীগন যা বলেছেন, যেমন সায়ীদ, সায়ীদ ইবনু মুসায়্যিব, সায়ীদ ইবনু জুবায়ির ও মুজাহিদ ইবনু জাবর। আমরা যদি এদের বিপরীত কিছু বলি তাহলে অবশ্যই নিন্দিত হবো।
আর যদি ইবনুল মুবারক, সুফিয়ান সাওরী এই আলেমদের বক্তব্যের বিপরীত আমরা কিছু বলি তাহলে নিন্দিতও হতে পারি আবার নন্দিতও হতে পারি।
হ্যাঁ তবে যদি আমরা (বর্তমানের) এসব আদর্শহীন আলেমদের বক্তব্যের বিপরীত কিছু বলি তাহলে আল্লাহর কসম এটা আ্মাদের জন্য প্রশংসার বিষয়।
মুখ্য বিষয়াবলিতে এবং মূলনীতিতে আমরা সালাফের খেলাফ বলেছি, প্রতিপক্ষ এমন কিছু নিয়ে আসুন দেখি!
হাঁ আমরা এসব আলেমদের বিপরীতে কথা বলছি কারণ এদের প্রতি আমাদের কোন আস্থা নেই, কারণ তারা সেই পক্ষই অবলম্বন করে এবং সেই সিদ্ধান্তই প্রকাশ করে যা আল্লাহর দুশমন কাফের তাগুত শাসকের অনুকূলে হয়।
প্রতিটি রাষ্ট্রই এবং এদের থেকে প্রত্যেক শাসকই মন্ত্রী নির্বাচনের মত করে কিছু গৃহপালিত সেবক ধর্মগুরু ও ভবিষ্যতবক্তা নিজের আশেপাশে জড়ো করে নিয়েছে।
উদাহরণত মাগ্রিবে পশ্চিম আফ্রিকায় এগুলোর নাম হলো আদ দুরুছুল হাসানিয়্যাহ (সুন্দর পাঠসমুহ), অথবা আল হায়য়াতুল হাসানিয়্যাহ (সুন্দর পরিষদ) বা আত-তাজাম্মুয়ুল হাসানি (সুন্দর সভা)।
যেমন আরব উপদ্বীপে এদের নাম হলো হায়য়াতু কিবারিল উলামা, (শীর্ষ উলামা পরিষদ), আর রাবেতাতুল আলামিল ইসলামী (মুসলিম বিশ্ব সংস্থা), জর্দানে হলো মুআসসাতু আলিল বায়ত (আহলে বায়তের প্রতিষ্ঠান), ইরাকে আল মুতামারুশ শা’বিল ইসলামী (মুসলিম জনতা কনফারেন্স), মিসরে আল আযহার, লিবিয়ায় লাজনাতুদ্ দাওয়াতুল ইসলামিয়া আল আলমিয়্যা (বিশ্বময় ইসলামি দাওয়াতি সংস্থা) … এমন আরো।
এই ক্ষেত্রে এই অর্থে তাগুতদের এমন আরো অনেক সংস্থা রয়েছে।
আমার যতটুকু জানা আছে সবকটা রাষ্ট্রে-ই এদের দ্বারা তাগুত নিজেদের সজ্জিত করে রেখেছে, আর এরা তো এরা-ই, এখানে-ওখানে-সেখানে মাটির কীটের ন্যায় লম্ফ ঝম্ফ করে ছুটে বেড়ায়।
ইতিমধ্যে আল্লাহ তায়ালা এসব তাগুতদের দ্বারা এদেরকে কিছু পরীক্ষার ও সম্মুখীন করেছেন, যেমন উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল সাদ্দাম কর্তৃক কুয়েত দখলের যুদ্ধের মুহুর্তে।
এসব আলেমরা দিশেহারা হয়ে পড়লো কোন দিকে যাবে? এই পক্ষে যাবে না সেই পক্ষে, কে জয়ী হবে?
তারা তাল মিলাতে অনুমান করতে লাগলো, কেউ কেউ এমন হলো তার কোন বর্ণ-গন্ধ-ই থাকলোনা। সে শুধু এই প্রতিক্ষায় আছে দেখি কে বিজয়ী হয়!
আর কিছু দল এদিক সেদিক ভাগ হয়ে পড়েছে যেমন ইখওয়ানুল মুসলিমীন, তারা যদি সৌদি শাসকগোষ্ঠীর বিপক্ষে বলতে যায়, তাহলে তারা নিজেদের চাকরি হারায়, আবার তাদের কেউ ঘনিষ্ঠ ছিল জর্দানের, কারো সম্বন্ধ ছিল ইরাকের সাথে, ফলে তারা জটিল উভসংকটে পড়ে যায়।
সেক্যুলার ধর্মনিরপেক্ষতাবাদিরা ইসলামপন্থীদের এসব (উদ্ভট দ্বিমুখীতার) কারনেও সমালোচনা করে থাকে, ইতিপুর্বে আল্লাহর তিরোহিত দুশমন ফারজ ফাওদা বলেছিল “তোমরা আমাদেরকে কোন ইসলাম পালন করতে বলছো সাউদি তাগুতের পৃষ্ঠপোষক ইসলাম না ইরাকিপ্রগতির তাগুতের ইসলাম।”
অতঃএব কে আছে এমন, যার জন্য এসব আলেমদের অনুসরণ প্রশংসনীয় হতে পারে?
সে ই প্রশংসার উপযোগী যে এসব আলেমদের অনুকরণ থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে, এই সময়ে সেই অভিনন্দিত, আর যে নিজের চিন্তা, বুদ্ধি, জ্ঞান ও দ্বীনকে আল্লাহর দ্বীন নিয়ে তামাশারতদের আবদ্ধ করে ফেলেছে সে ই হলো নিন্দাযোগ্য।
আর বর্তমান সময়টি হলো কিতাব থেকে গ্রহনের সময়, যেমনটি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার শেষ জামানার অনুসারীদের ব্যাপারে বলেছেন যে, তারা লটকানো পত্রের স্মরনাপন্ন হবে এবং সেটাকেই গ্রহন করবে।[3] এবং এসব তাগুতসেবিদের কথার প্রতি খুব সতর্ক অবস্থান নিবে।
এর অর্থ এটা নয় যে আমরা তাদের সব কথার-ই বিরোধিতা করবো বরং আমরা তাদেরকে সতর্কতার মানদন্ডে স্থাপন করবো, কারণ মিথ্যাবাদীও তো অনেক সময় সত্য কথা বলে থাকে এবং কখনো তাদের থেকে সঠিক কথা ও প্রকাশ পায় বিধায় আমরা তাদের থেকে যা সঠিক সে গুলো নেবো আর যেখানে তারা ভুলের স্বীকার হয়েছে তা পরিহার করবো।
সুতরাং তাদের বক্তব্যের বিপরীতে অবস্থানের কারণে আমাদের উপর দোষারোপ করা যাবে না বরং এই বিরোধীতার কারণে আমরা অবশ্যই অভিনন্দিত হবো।
আমরা – আমাদের জামাত, আমাদের ব্যক্তিবর্গ – আমাদের আদর্শ গঠিত হয়েছে তাগুতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, তাদের কাফের আখ্যায়িত করা, তাদের সাথে বিদ্রোহ করা, তাদের নিন্দা জানানো, তাদের পূজনীয়দের গালমন্দ করা এবং তাদের অবস্থানের প্রতি ঘৃনা প্রকাশের উপর।
আমরা যা বললাম এগুলোর সাথে আল্লাহ তায়ালা যা বলেছেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন, পুর্ববর্তী নির্ভরযোগ্য ইমামগণ যা বলেছেন, তার সাথে কোথায় বেমিল আছে?
“আর সমকালিনতা নিষিদ্ধ’ তাহলে তারা কিভাবে চায় যে আমরা সমসাময়িকদের কথা গ্রহন করি। আর এটাও পুর্বসুরি সালাফের কর্মপদ্ধতি যা বলেছেন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ-
ولا تقلد دينك للحي، لأنه لا تؤمن عليه الفتنة
“তোমার দ্বীনকে কোন জীবিত ব্যক্তির অনুগামী বানিওনা, কারণ সে ফিতনাগ্রস্থ হওয়ার ব্যপারে নিঃশঙ্ক হওয়া যায় না।”
অতঃপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে এসব জীবিতদের হাকীকতও বলে দিয়ে গেছেন-
من أتى أبواب السلاطين افتتن
“যে ব্যক্তি শাসকশ্রেনীর দ্বারে দ্বারে গমন করে, সে ফিতনাগ্রস্থ হয়ে যায়।”
তাহলে এসমস্ত লোকদের ক্ষেত্রে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ফয়সালা হলো যে তারা ফিতনাগ্রস্থ এবং তারা ফিতনাবাজ, তাগুত যা বলে তারা সেই কথা-ই বলে, ওদের আদেশ থেকে তারা নির্দেশনা লাভ করে।
আর আমাদের ইমাম এই সব লোকেরা নয়।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
أخوف ما أخاف عليكم الأئمة المضلون
“তোমাদের জন্য সর্বাধিক ভয়ঙ্কর যে বিষয়ের ভয় করছি, সেটা হলো গোমরাহকারী সব ইমাম।”
(ইমাম আহমাদ বর্ণনা করেছেন।)
এ সব ইমামদেরকে আমরা ভয় করি এবং এদের থেকে লোকদের সতর্ক করি।
এবং উম্মতের জন্য অপরিহার্য যে তারা ওই সব ইমামদের থেকে দ্বীন গ্রহণ করবে যারা দ্বীন নিয়ে সন্তুষ্ট হয়ে রয়েছেন, শাসকবৃন্দের বিভিন্ন দ্বার থেকে দুরত্ব বজায় রেখেছেন, এবং শাসকবৃন্দের জীবনব্যবস্থার অন্তর্ভুক্তি, তাদের পন্থা থেকে এবং তাদের সংবিধান গ্রহণের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছেন।
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার এই দ্বীনই আমরা গ্রহন করেছি।
[1] এই লেখাটি নেয়া হয়েছে শায়খের আলোচনার এক রেকর্ড থেকে যেখানে তিনি এক প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন। আমরা সেটা থেকে নিতে গিয়ে কিছু বাক্য ও শব্দ পঠনরীতির সাথে মিল রাখার জন্য পরিমার্জন করেছি যেমন কোন অব্যয় যুক্ত করা, কোন শব্দ অগ্রপশ্চাত করা, কথ্যবাক্যের পরিবর্তে বিশুদ্ধ বাক্য রাখা। যেমন মিম্বারের মুল বক্তব্যের সাথে কিছু টীকা সংযুক্ত করেছি।
[2] এছাড়াও ২০০৯ এ কিং আবদুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ে সহশিক্ষা চালুর বিরোধিতা করায় হাইয়াতু কিবারিল উলামার সদস্য সাদ বিন নাসির আশ-শিতরিকে পদচ্যুত করা হয়।
[3] عن جبير، أنه قال: قدم علينا أبو جمعة الأنصاري صاحب رسول الله صلى الله عليه وسلم ببيت المقدس ليصلي فيه، ومعنا رجاء بن حيوة يومئذ، فلما انصرف خرجنا معه لنشيعه، فلما أردنا الانصراف، قال: إن لكم علي جائزة وحقا أن أحدثكم بحديث سمعته من رسول الله صلى الله عليه وسلم، فقلنا: هات يرحمك الله، فقال: كنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم، معنا معاذ بن جبل عاشر عشرة، فقلنا: يا رسول الله، هل من قوم أعظم منا أجرا آمنا بك واتبعناك؟ قال: (ما يمنعكم من ذلك ورسول الله صلى الله عليه وسلم بين أظهركم، يأتيكم الوحي من السماء، قوم يأتيهم كتاب بين لوحين فيؤمنون به ويعملون بما فيه، أولئك أعظم منكم أجرا، أولئك أعظم منكم أجرا، أولئك أعظم منكم أجرا) [المعجم الكبير، للطبراني، برقم: 3460
জুবাইর রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন যে বাইতুল মুকাদ্দাসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ছাহাবি আবু জুমা আনছারি আমাদের নিকট নামাযের জন্য আসলেন, সেইদিন আমাদের সাথে ছিলেন রাজা’ ইবনে হায়ওয়া, পরে যখন তিনি ফিরে যাচ্ছিলেন আমারা তাঁকে এগিয়ে দেয়ার জন্য তার সাথে বের হলাম, যখন আমরা ফিরতে শুরু করলাম তিনি বললেনঃ
আমার নিকট তোমাদের জন্য একটি হাদিয়া আছে এটা অধিকার যে আমি তোমাদেরকে একটি হাদিস শুনিয়ে দেব যা আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি আমরা বললাম জী বলুন, আল্লাহ তায়ালা আপনার উপর দয়া করুন। তিনি বললেনঃ আমরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লামের সাথে ছিলাম আর আমাদের সাথে ১০জনের ১জন ছিলেন মুয়ায ইবনে জাবাল রাজিঃ। আমরা বললাম হে আল্লাহর রাসুল! কোন জামাত কি আমাদের চেয়ে বেশী সাওয়াবের ভাগি হতে পারবে? আমরা তো আপনার উপর ঈমান এনেছি আপনার সরাসরি অনুসরণ করছি।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তোমরা তো এমনটি করবেই যেহেতু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের মাঝে বিদ্যমান, তোমাদের কাছে আসমান থেকে ওহী আসে (যা তোমরা প্রত্যক্ষ করে থাক।)
একটি জামাত হবে তাদের নিকট কিতাব আসবে দুই মলাটের মাঝে, তারা এর উপর ঈমান আনবে এবং সে অনুযায়ী আমল করবে এসব লোকেরা সাওয়াব বেশী পাবে। (মুজামে কাবীর তাবরানী-৩৪৬০)
عن عمر بن الخطاب، قال: كنت مع رسول الله صلى الله عليه وسلم جالسا فقال: (أنبئوني بأفضل أهل الإيمان إيمانا؟)، قالوا: يا رسول الله، الملائكة؟! قال: (هم كذلك، ويحق لهم ذلك، وما يمنعهم وقد أنزلهم الله المنزلة التي أنزلهم بها؟ بل غيرهم)، قالوا: يا رسول الله، الأنبياء الذين أكرمهم الله برسالته والنبوة؟! قال: (هم كذلك، ويحق لهم، وما يمنعهم، وقد أنزلهم الله المنزلة التي أنزلهم بها؟ بل غيرهم)، قالوا: يا رسول الله، الشهداء الذين استشهدوا مع الأعداء؟! قال: (هم كذلك ويحق لهم، وما يمنعهم، وقد أكرمهم الله بالشهادة مع الأنبياء؟ بل غيرهم)، قالوا: فمن يا رسول الله؟! قال: (أقوام في أصلاب الرجال، يأتون من بعدي، يؤمنون بي ولم يروني، ويصدقون بي ولم يروني، يجدون الورق المعلق فيعملون بما فيه، فهؤلاء أفضل أهل الإيمان إيمانا) [مسند أبي يعلى الموصلي، برقم: 149].
উমার ইবনে খাত্তাব রাঃ থেকে বর্নিত তিনি বলেন আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বসা ছিলাম তখন তিনি বললেন
বলো দেখি ঈমানের মধ্যে শ্রেষ্ট ঈমানের অধিকারী কে? সবাই বলল হে আল্লাহর রাসুল! ফিরিশতাগণ?! রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তারা এমনই এবং এটা তাদের জন্য হবারই কথা, আর কেনই বা হবেনা যখন আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে সেই মর্যাদা দিয়েছেন যা তারা লাভ করে আছে? বরং অন্য কেউ,
সাহাবাগণ বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! নবীগণ!? যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবুয়াত ও রিসালাতের দ্বারা সম্মানিত করেছেন, বললেনঃ তাঁরা এমনই এটাই হবার কথা আর কেনই বা হবেনা যখন আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে সেই মর্যাদা দিয়েছেন যা তারা লাভ করে আছে? বরং অন্য কেউ,
সাহাবাগণ বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! শহীদগণ!? যারা শত্রুর সাথে (লড়ায়ে) শহীদ হয়েছেন বললেনঃ তাঁরা এমনই এটাই হবার কথা আর কেনই বা হবেনা যখন আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে নবীদের সাথে শাহাদতের মর্যাদা দিয়েছেন, বরং অন্য কেউ,
সাহাবাগন বললেন তাহলে কে ইয়া রাসুলাল্লাহ! বললেনঃ পূর্বপুরুষদের শিরদাঁড়ায় কিছু লোক আছে আমার পরে তারা আসবে আমার উপর ঈমান আনবে অথচ তারা আমাকে দেখেনি, আমাকে সত্যজ্ঞান করবে অথচ আমাকে দেখেনি, লটকানো পত্র তারা লাভ করবে সেখানে যা আছে তার উপর আমল করবে তারা ঈমানদারদের মধ্যে শ্রেষ্ট ঈমানদার। (মুসনাদে আবু ইয়া’লা ১৪৯)