আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن تَنصُرُوا اللَّهَ يَنصُرْكُمْ وَيُثَبِّتْ أَقْدَامَكُمْ
অর্থ: হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা দৃঢ়প্রতিষ্ঠ করবেন। [ সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৭ ]
অধিকাংশ মানুষ হয়তো আল্লাহ তায়ালার এ কথার দিকে দৃষ্টি দেয়, “আল্লাহ তা’য়ালা তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখবেন”, কিন্তু তার পূর্বে যে শর্ত রয়েছে, “যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর” এ দিকে কেউ দৃষ্টি দেয় না। অথচ আল্লাহ তা’আলা স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, আল্লাহ তা’য়ালা সাহায্য করবেন যদি তোমরা তাকে সাহায্য কর। কীভাবে বান্দা আল্লাহ তায়ালাকে সাহায্য করবে?
উস্তাদ আব্দুল্লাহ বিন খালেদ আল-আ’দম বলেন: বান্দার কাছ থেকে রবের সাহায্য কামনার উদ্দেশ্য হল – বান্দার দোয়ার বিনিময়ে আল্লাহ বান্দাকে এমন সাহায্য করবেন যা দ্বারা সে গুনাহ ও খারাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকতে পারে, কল্যাণকর কাজের চেষ্টা করতে পারে এবং উত্তম আমলের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য অর্জন করতে পারে। আর পদস্খলন ও ভুলত্রুটির কারণে সর্বদা অনুতপ্ত হয় এবং তাওবা-ইস্তেগফার করতে থাকে। ফলে আসমান-জমিনের রব (তার প্রতি) সন্তুষ্ট হয়ে যায়।
ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রহ. বলেন, কুরআন এ কথার প্রমাণ করে যে, শক্তি-সামর্থ্য ও ইজ্জত-সম্মান আল্লাহর নিকট তাওবাকারী ইবাদতগুজার বান্দাদের জন্যই। কুরআনের বহু জায়গায় এর সমর্থনে আয়াত রয়েছে। যেমন সূরা হুদে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-
وَيَا قَوْمِ اسْتَغْفِرُواْ رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُواْ إِلَيْهِ يُرْسِلِ السَّمَاء عَلَيْكُم مِّدْرَارًا وَيَزِدْكُمْ قُوَّةً إِلَى قُوَّتِكُمْ وَلاَ تَتَوَلَّوْاْ مُجْرِمِينَ
আর হে আমার কওম! তোমাদের পালন কর্তার কাছে তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ কর; তিনি আসমান থেকে তোমাদের উপর বৃষ্টি ধারা প্রেরণ করবেন এবং তোমাদের শক্তির উপর শক্তি বৃদ্ধি করবেন, তোমরা কিন্তু অপরাধীদের মত বিমুখ হয়ো না। [ সূরা হুদ ১১:৫২ ]
এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, তিনি তোমাদের উপর বৃষ্টি ধারা প্রেরণ করবেন এবং তোমাদেরকে আরো শক্তি দিয়ে তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করবেন। এটা কখন করবেন? যখন ইস্তিগফারের আমল করা হবে। যেমনটি আল্লাহ তা’আলা উক্ত আয়াতে এভাবে বলেছেন:
اسْتَغْفِرُواْ رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُواْ إِلَيْهِ
অর্থ: তোমাদের পালন কর্তার কাছে তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ কর।
উক্ত আয়াতের আরেকটি অংশ হচ্ছে:
وَيَزِدْكُمْ قُوَّةً إِلَى قُوَّتِكُمْ
অর্থ: তিনি তোমাদেরকে আরো শক্তি দিয়ে তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করবেন…।
এখানে ‘قُوَّةً’ (শক্তি) শব্দটি নাকেরাহ তথা অনির্দিষ্ট। এটাকে অনির্দিষ্ট আনা হয়েছে অনেক প্রকারের শক্তি বুঝানোর জন্য। ‘قُوَّةً’ বা শক্তি কি জিনিস?
এর উত্তরে বলা হয় যে, হতে পারে এখানে শক্তি দ্বারা বাহ্যিক শক্তি উদ্দেশ্য। বাকি এটা অভ্যন্তরীণ শক্তিও হতে পারে। আবার কখনো উভয়টি একত্রেও উদ্দেশ্য হতে পারে। আল্লাহ তায়ালা অভ্যন্তরীণ শক্তি বৃদ্ধি করবেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল বীরত্ব, ধৈর্য, দৃঢ়তা, অগ্রগামিতা এবং স্থিরতা দান করবেন। আর বাহ্যিক শক্তি দ্বারা উদ্দেশ্য হল শারীরিক শক্তি, অস্ত্র ও সংখ্যা ইত্যাদির শক্তি।
উস্তাদ বলেন: বান্দার কাছে রবের সাহায্য কামনার অর্থ হল – যেন বান্দার প্রতি আল্লাহ তা’আলার এমন সাহায্য অবতীর্ণ হয়, যা দ্বারা সে তার আমলকে আল্লাহর জন্য খালেস করে নিতে পারে। নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারে। নিজের শক্তি ও সামর্থ্যের সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত হতে পারে। দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য অর্জন করতে পারে এবং আল্লাহর সামনে নিজকে আদনা(নগণ্য) হিসেবে পেশ করতে পারে যাতে আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান।
বান্দা থেকে কাঙ্ক্ষিত সাহায্য হল – বান্দা ঐ ব্যক্তির কথা শুনবে এবং মানবে যাকে আল্লাহ তায়ালা নেতৃত্বের অধিকারী বানিয়েছেন। কেননা (বান্দার আল্লাহকে) সাহায্য করার অর্থই হল, আল্লাহ তায়ালার আদিষ্ট বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন করা, আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে চলা এবং যা দ্বারা আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হন তার বাস্তবায়নের চেষ্টা করা।
সুতরাং আল্লাহ তায়ালা যে সম্পর্কে আদেশ করেছেন তথা “শ্রবণ ও অনুসরণ করা” – এটাই অনুসরণ করাই হল আল্লাহ তায়ালাকে সাহায্য করা।
উস্তাদ বলেন: এখানে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল – কাঙ্ক্ষিত সাহায্যের মানেই হচ্ছে বান্দার শক্তি ও সামর্থ্য ছেড়ে একমাত্র আল্লাহ তা’আলার শক্তি ও সামর্থ্যের দিকে যাওয়া এবং তাঁর উপরই ভরসা করা।
অর্থাৎ কখনো কখনো দেখা যায় যে, মানুষ নিজের শক্তির উপর ভরসা করে, নিজের অস্ত্রের উপর ভরসা করে আর বলে যে, আমার নিকট দামি অস্ত্র আছে, আমার নিকট অত্যাধুনিক ও শক্তিশালী অস্ত্র আছে, আর সে তার বাহ্যিক এই শক্তির উপরই ভরসা করে থাকে। – এটা ভুল। এমনটা করা যাবে না। আমরা অনেক সময় শুনতে পাই ভাইদের কেউ কেউ হয়ত বলে থাকেন, “আলহামদুলিল্লাহ, বর্তমানে আল্লাহর ইচ্ছায় আমাদের কাছে অস্ত্রের যথেষ্ট মজুদ রয়েছে”। অথবা বলে “আলহামদুলিল্লাহ, আমরা এত এত পরিমাণ গনিমত হিসেবে পেয়েছি”। অথবা এভাবে বলে যে, “আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আ’লামীন(সমস্ত প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালকের জন্য) আমাদের নিকট আধুনিক সকল যোগাযোগ মাধ্যম এবং অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে”। এটা হচ্ছে অস্ত্রের উপর ভরসা। এটা আল্লাহ তা’আলার উপর ভরসা নয়।
আবার কখনো এভাবে বলে যে, “আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ চাহে তো আমাদের অমুক নেতা একটি পরিকল্পনা করবেন..!” অর্থাৎ এখানে ভরসা হচ্ছে নেতার উপর, তার পৃষ্ঠপোষকতা এবং তার তীক্ষ্ণ মেধার উপর। আর এটাই হচ্ছে ভুল।
আবার কখনো এভাবে বলে যে,“আমরা সুদৃঢ় পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি…” – এটাও পরিকল্পনার উপর ভরসা, আল্লাহর উপর ভরসা নয়।
তবে হ্যাঁ, আমরা অবশ্যই পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিব এবং পরিকল্পনাও গ্রহণ করব। এভাবে উত্তম নেতা নির্বাচন, উৎকৃষ্ট যোগাযোগ মাধ্যমও গ্রহণ করব। সাধ্যানুযায়ী অত্যাধুনিক দামি এবং পরীক্ষিত নির্ভরযোগ্য অস্ত্রের পরিমাণও জমা করব। অর্থাৎ আমরা পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিব কিন্তু নির্ভর করব একমাত্র আল্লাহ তা’আলার উপর, ভরসা করব একমাত্র তাঁরই উপর। আমাদের কাছে যা থাকবে তার উপর ভরসা করব না। কেননা আমরা তো আল্লাহর উপরই ভরসা করি।
আমাদের শত্রুরা আমাদের চাইতে অনেক বেশি অস্ত্র ও সংখ্যার অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন। তারা এমন উন্নত অস্ত্র, দক্ষ পরিকল্পনা ও নেতৃত্বের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও কেন অপদস্থ হয়?
এর কারণ হচ্ছে, আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করি আর তারা করে না। সুতরাং আমরাও যদি আল্লাহর উপর ভরসা ছেড়ে দিয়ে শত্রুদের মত আমাদের কাছে যা আছে তার উপর ভরসা করি তাহলে নিশ্চিত পরাজয় বরণ করতে হবে। অতএব আমাদের আল্লাহর উপর ভরসা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আর এটাই হল বান্দার নুসরাত।
উস্তাদ বলেন: “বান্দার কাছে রবের সাহায্য কামনার অর্থ হল” বান্দা যাতে যথাযথ প্রস্তুতি ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম গ্রহণ করে নুসরাতে ইলাহী এর নিয়ামত অর্জন করতে পারে সেই চেষ্টা করা। একটা ভুল ধারণা হল, যে আল্লাহর উপর ভরসা করবে সে আসবাব গ্রহণ করবেনা। এটা ভুল চিন্তা এবং পরাজয়ের কারণ।
এ বিষয়ে তিনি শাইখ আবু কাতাদাহ আল-ফিলিস্তিনী রহ. এর একটি কথা উল্লেখ করেছেন। শাইখ তার আলোচনায় আল্লাহ তা’য়ালার এই বাণী উল্লেখ করেন –
إِنَّمَا اسْتَزَلَّهُمُ الشَّيْطَانُ بِبَعْضِ مَا كَسَبُوا
তাদের কিছু কৃতকর্মের কারণে শয়তানই তাদের পদস্খলন ঘটিয়েছিল………।
আয়াতটি উল্লেখ করে বলেন, “এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা। (এটি দ্বারা তিনি পূর্বের এ কথাকে বুঝিয়েছেন: একটা ভুল ধারণা হল, যে আল্লাহর উপর ভরসা করবে সে আসবাব গ্রহণ করবেনা। এটা ভুল চিন্তা এবং পরাজয়ের কারণ।) শাইখ রহ. বলেন, আমি প্রত্যেক মুজাহিদকে একথার প্রতি খেয়াল রাখার জন্য বলি। আর এখানে আরো একটি বিষয় রয়েছে যা আমরা আলোচনা করব, তা হল ‘নিশ্চয়ই গুনাহ পরাজয়ের কারণ’। কিন্তু প্রশ্ন হল – “সকল গুনাহ-ই কি পরাজয়ের কারণ? উত্তর হল – “না। সকল গুনাহ পরাজয়ের কারণ নয়। বরং যে গুনাহের সম্পৃক্ততা জিহাদ ও ক্বিতালের সাথে রয়েছে শুধু সে গুনাহ-ই পরাজয়ের কারণ।
যেমন বর্তমানে এধরণের যে সকল গুনাহ হয় তা হল:- প্রশিক্ষণ না নেয়া, এ গুনাহটাও পরাজয়ের একটি কারণ। এমনিভাবে জামাআহ তথা দলবদ্ধতা ত্যাগ করা বা দল ভেঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হওয়া, আমিরের নাফরমানী করা, শক্তি অর্জনের সুন্নাহর পথকে গ্রহণ না করা – এ বিষয়ে উপকারী ব্যক্তি নির্ধারণ না করা ইত্যাদি গুনাহও পরাজয়ের অন্যতম কারণ। অন্যান্য গুনাহের তুলনায় এগুলোকে ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নেই, কেননা অন্যান্য গুনাহের প্রভাব যুদ্ধের ময়দানে ফলাফলের ক্ষেত্রে তাৎক্ষনিকভাবে দেখা যায় না। কিন্তু এগুলোর প্রভাব তাৎক্ষনিকভাবে দেখা যায়।
তবে আমরা অবশ্যই অন্যান্য গুনাহ ও অপরাধ থেকেও তাওবা করার কথা বলি। যেমন ধরুন – আমার মাঝে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার গুনাহ রয়েছে! হ্যাঁ, এরও প্রভাব রয়েছে। কিন্তু এটা কি (যুদ্ধক্ষেত্রে) জামাআহ বা দল ত্যাগ করা থেকে বড় অপরাধ?
এর থেকেও বড় অপরাধ যেটা সেটা হল প্রশিক্ষণ না নেয়া, অস্ত্র সংগ্রহ না করা। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাহায্য কামনা করে, সে কেন যুদ্ধের পূর্বেই অস্ত্র সংগ্রহ করবে না? সে কি অক্ষম? সে কি অপরাধী এবং গুনাহগার নয়? এ সবগুলোই কি গুনাহ নয়?
উস্তাদ বলেন: অন্যান্য গুনাহের খারাবীও কম নয়, কিন্তু তার প্রভাব ময়দানে ফলাফলের ক্ষেত্রে তাৎক্ষনিক নয়। আর ঐ সকল গুনাহ যা জিহাদ ও ক্বিতালের আ’মালের সাথে সম্পৃক্ত সেগুলোর প্রভাব তাৎক্ষনিক। একারণেই এটা أبعد النجعة “আবআদুন নুজ’আ” এর মত।
أبعد النجعة “আবআদুন নুজ’আ” কি জিনিস? তা হল দানা পানির তালাশে দূরবর্তী কোন স্থানে গমন করা। এটা এমন স্থান, যেখানে যাওয়া হয় বিনোদন কিংবা পশু চড়ানোর জন্য, তা অনেক দূরবর্তী একটি স্থান, যার আশে পাশে অনেক জায়গা রয়েছে। এমন স্থানকেই আমরা ‘আবআদুন নুজয়া’ বলে থাকি। (ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই পরিভাষাটি তখনই ব্যবহার হয় যখন সে তার উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সঠিক পথ ছেড়ে ভুল পথে অগ্রসর হয়। যেমন বলা হয় “ফুলানুন আবআদুন নুজ’আ”)। ঠিক তদ্রুপ জিহাদ ও ক্বিতালের আ’মালের সাথে সম্পৃক্ত গুনাহগুলোকে পরাজয়ের সবব বা কারণ না ধরে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের গুনাহ ও ইয়াতীমের মাল ভক্ষণের মত গুনাহগুলোকে পরাজয়ের কারণ ধরলে তখনই বলা হয় এটা أبعد النجعة “আবআদুন নুজ’আ” এর মত।
সুতরাং আমাদের জন্য উচিৎ হল, সবব আর মুসাব্বাবের মাঝে কী সম্পর্ক এব্যাপারে সতর্ক থাকা। আ’মল ও নতীযা বা ফলাফলের সাথে কি সম্পর্ক? এবং কোন গুনাহগুলো পরাজয়ের কারণ আর কোন গুনাহগুলো পরাজয়ের কারণ না? সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা। শাইখের কথা এখানেই শেষ। আমরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে শাইখের মর্যাদা বুলন্দির প্রার্থনা করছি।
جزاكم الله خيرًا، والسلام عليكم ورحمة الله وبركاته