পৃথিবীর সব থেকে বেশি আলেম যে দেশের জেলে বন্দী, তা হচ্ছে সৌদি আরব। কথাটা কতটুকু সত্যি এক মাত্র আল্লাহ তালা ভালো জানেন।
তবে ইসলামিক হিউম্যান রাইটস কমিশনের মতে সৌদির জেলে প্রায় ৩০,০০০ এর চেয়েও বেশি পলিটিকাল প্রিজনার আছে।
একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী তাদের জেলে প্রায় ৩৫৯ জন আলেম রয়েছেন। আসুন সেই সব আলেমদের মধ্য থেকে কয়েক জন সমন্ধে কিছু জেনে নেই-
.
১। শাইখ সুলাইমান আল উলওয়ানঃ
তিনি শাইখ হাম্মাদ আল আনসারী থেকে ১২টি হাদিস বই পড়াবার ইজাযাহ পান। সৌদি শাসক তাকে মুক্তির জন্য দুইটি শর্ত দেয়-
ক) তাকে সৌদি শাসকদের বৈধ মুসলিম শাসক হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে।
খ) সৌদি বিচারালয় ইসলামি আইন অনুযায়ী পরিচালিত হয় এবং সৌদি রাজবংশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয় বলে ঘোষণা দেয়া।
তাদের প্রস্তাবের জবাবে তিনি বলেন, “আমাকে দ্বিখণ্ডিত করে ফেললেও আমি তা বলবনা।”
.
২। শাইখ নাসির আল ফাহাদঃ
শাইখ নাসির আল ফাহাদের বুখারি,মুসলিম,আবু দাউদ,তিরমিজি ,নাসাই,ইবনে মাজা,দারেমি এবং মুয়াত্তা সহ ৯ টি হাদিসের বই মুখস্থ আছে। সম্ভবত তিনিই পৃথিবীতে একমাত্র আলেম যার এত গুলো হাদিসের বই মুখস্থ।
তিনি মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আকিদা বিভাগের ডিন ছিলেন।
এছাড়াও তার ২০ টি আকিদাহ ও ফিকহের বই মুখস্থ। উনি একবার বলেছিলেন, “আজকের জামানার ইবনে তাইমিয়ারা কোথায়, তারা হচ্ছেন জেলে”।
.
৩।শাইখ আলী ইবনে খুদাইরঃ
সমসাময়িক আলেমদের মধ্যে সৌদি রাজবংশের সীমাহীন দুর্নীতি, জুলুম এবং অনৈসলামীক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তিনিই সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন। পরিণাম?? ১৩ বছর ধরে সৌদি কারাঘারে বন্দি আছেন। তাছাড়া তাকে তার সকল ফতওয়া তোলে নিতে বাধ্য করা হয়।
.
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল হকপন্থিরা কোথায়?? এর জবাবে তিনি বলেন, “”হকপন্থী ব্যক্তিরা আছে যুদ্ধের ময়দানে, কারাগারে অথবা মাটির নিচে”।
আল্লাহ তালা এই তিনজন সহ বাকি আলেমদের মুক্তি ত্বরান্বিত করুন। আমীন।
.
#এছাড়াও, এবছরের শুরুতে ৪০ এর অধিক আলেমকে হত্যা করা হয়। এদের মধ্যে রয়েছেন শায়খ ফারিস আজ জাহরানি রহঃ ..
শায়খ ফারিস আহমাদ জামান আল-শুহাইল আয-যাহরানি।
কুনিয়া আবু জান্দাল আল আযদি। জন্ম ১৩৯৭ হিজরি (১৯৭৭ ইং)। জন্মস্থান যাহরানের ভূমির আল-জাওফা গ্রামে।
.
শায়খ ফারিস আয-যাহরানির পড়াশুনার প্রথম পাঠ সম্পন্ন হয় গ্রামের স্কুলে। হাই স্কুলে পড়ার সময় শায়খ কুরআন হিফয করেন এবং হিফযের উপর ইজাযাহ লাভ করেন। হাইস্কুল শেষ হবার সাথে সাথেই শায়খ ফারিস ভর্তি হন মদিনার উলুম আল-কুরআন কলেজে। কিন্তু এক সেমিস্টার শেষ করেই তিনি ভর্তি হন ইমাম মুহাম্মাদ বিন সাউদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
.
এসময়ে তিনি সাহিহ আল বুখারি ও সাহিহ মুসলিম মুখস্থ করেন। ২০০০ সালে তিনি কিং খালিদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলরস ডিগ্রি পাবার পর তিনি আবহা শহরে কাজী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এটা ২০০০ এর প্রথম দশকের প্রথম দিকের কথা।
.
শায়খ ফারিসের মুখস্ত করা কিতাবসমূহের মধ্যে আছে আরবি ব্যাকরনের উপর ইবন মালিকের আলফিয়া, এবং ইবন মালিকের আফফা’আল ফি আস’সারফ এর লাম্মিয়াহ। তিনি আরো মুখস্থ করেন আল সুয়ুতির মানদুমাহ। ২০০৪ সালে শায়খকে গ্রেফতার করা হয়।
.
জেলে থাকা অবস্থায় শায়খ মুখস্থ করেন ইবনুল কায়্যিমের নুনি’য়া। শায়খের মা বলেছেন, ‘ফারিস ওর সেলে বসে প্রতি তিন দিনে একবার করে কুরআন খতম করে।’ শায়খের সেলের দেয়ালে লেখা ছিলঃ
.
এই সেলে বসে আমি ১৫ বার বুখারি ও মুসলিম স্মৃতি থেকে বর্ননা করেছি – ফারিস আশ-শুহাইল আয-যাহরানি।
.
শায়খ সুলাইমান আল ‘উলওয়ান বলেন – শায়খ ফারিসের রয়েছে ধারালো স্মৃতি, এবং তিনি যাহরানের পর্বতসমূহের মধ্য থেকে একটি পর্বত।
সৌদির একটি শহরের মেয়রের অফিসের একজন কর্মকর্তা বলেন, “আমেরিকার জুতার সোল হচ্ছে সৌদি শাসকেরা এবং সৌদি শাসকদের জুতার সোল হচ্ছে সৌদির আজ্ঞাবহ আলেমরা। (যেমন- বর্তমান গ্র্যান্ড মুফতি, সালিহ আল ফাওজান, রাবি আল মাদখালি, দাম্মাম ইসলামি সেন্টারের কিছু আলেম, মতিউর রহমান মাদানি, আব্দুল্লাহিল কাফি, কাজি ইব্রাহিম, আবদুল্লাহ শাহেদ মাদানি প্রমুখ) …
এসকল আলেমরা সৌদি কর্তৃক মুসলিম হত্যায় সমর্থন যোগায় (যেমন- ইয়েমেন সৌদি হাজার পাচেক সুন্নি হত্যা করেছে, সিরিয়াতেও (আই এস বা হুসি শিয়াদের নয়)…
এদের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া জরুরী!
#সুত্রঃ
১ . Article “Saudi Arabia’s Political Prisoners by Islamic human right commission
২. প্রাচীর।
৩. শাইখ আহমেদ মুসা জিবরীলের হাফিঃ লেকচার।
——-
বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃ “সৌদি সরকারের ব্যাপারে শারিয়াহ’র রায়” !
ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন । ধ্বংস অনির্বায এই জালিম শাষকের জন্য । এতো দেখছি জালিম হাজ্জাজকেও হার মানাল