পরীক্ষা ও সবর – নির্বাচিত আয়াত ও হাদিস

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

 

الإبتلاء والصبر

পরীক্ষা ও সবর

পরীক্ষা ও সবর: নির্বাচিত আয়াত ও হাদীস

 

পরীক্ষা

يا مخنث العزم اين انت والطريق طريق تعب فيه آدم وناح لا جله نوح ورمى في النار الخليل واضجع للذبح اسماعيل وبيع يوسف بثمن بخس ولبث في السجن بضع سنين ونشر بالمنشار زكريا وذبح السيد الحصور يحيى وقاسى الضر أيوب وزاد على المقدار بكاء داود وسار مع الوحش عيسي وعالج الفقر وأنواع الأذى محمد تزهي انت باللهو واللعب

ওহে ! দুর্বল সংকল্পের অধিকারী তুমি কোথায়?

আরে এটিতো সে পথ,

যে পথে চলতে গিয়ে ক্লান্ত হয়েছেন আদাম,

ক্রন্দন করতে হয়েছে নুহ কে।

আগুনে নিক্ষিপ্ত হতে হয়েছে খালিলুল্লাহ ইব্রাহিমকে।

জবেহ করতে চিৎ করে শোয়ানো হয়েছে ইসমাঈলকে।

খুব সল্প মূল্যে বিক্রয় করা হয়েছে ইউসুফকে।

কারাগারে কাটাতে হয়েছে জীবনের দীর্ঘ কয়েকটি বছর।

করাত দিয়ে দ্বিখণ্ডিত করা হয়েছে জাকারিয়াকে।

জবেহ করা হয়েছে সাইয়্যেদ ইয়াহইয়াকে,

দুঃখ-দুর্দশা ভোগ করেছেন আইয়ুব।

অনেক অনেক বেশি ক্রন্দন করেছেন দাউদ।

বন্য প্রাণীর ন্যায় জীবন যাপন করেছেন ঈসা

[আলইহিমুস স্বলাতু ওয়াস সালাম]

নানা ধরনের কষ্ট সহ্য করেছেন মুহাম্মাদ আর তুমি খেল তামাশায় মত্ত!!!

ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রহঃ

 

ﺑﺴــــــــــﻢﷲﺍﻟﺮﺣﻤﻦﺍلرﺣﻴﻢ

الٓمٓ (1) أَحَسِبَ النَّاسُ أَن يُتْرَكُوٓا أَن يَقُولُوٓا ءَامَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ (2) وَلَقَدْ فَتَنَّا الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۖ فَلَيَعْلَمَنَّ اللَّهُ الَّذِينَ صَدَقُوا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكٰذِبِينَ (3(

১) আলিফ-লাম-মীম।

২) মানুষ কি মনে করে যে, তারা একথা বলেই অব্যাহতি পেয়ে যাবে যে, আমরা বিশ্বাস করি এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না?

৩) আমি তাদেরকেও পরীক্ষা করেছি, যারা তাদের পূর্বে ছিল। আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন যারা সত্যবাদী এবং নিশ্চয়ই জেনে নেবেন মিথুকদেরকে। (সূরা আনকাবুত, ১-৩)

 

أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَأْتِكُم مَّثَلُ الَّذِينَ خَلَوْا مِن قَبْلِكُم ۖ مَّسَّتْهُمُ الْبَأْسَآءُ وَالضَّرَّآءُ وَزُلْزِلُوا حَتّٰى يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ ءَامَنُوا مَعَهُۥ مَتٰى نَصْرُ اللَّهِ ۗ أَلَآ إِنَّ نَصْرَ اللَّهِ قَرِيبٌ

তোমাদের কি এই ধারণা যে, তোমরা জান্নাতে চলে যাবে, অথচ সে লোকদের অবস্থা অতিক্রম করনি যারা তোমাদের পূর্বে অতীত হয়েছে। তাদের উপর এসেছে বিপদ ও কষ্ট।

আর এমনি ভাবে শিহরিত হতে হয়েছে যাতে নবী ও তাঁর প্রতি যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে পর্যন্ত একথা বলতে হয়েছে যে, কখন আসবে আল্লাহর সাহায্য! তোমরা শোনে নাও, আল্লাহর সাহায্য একান্তই নিকটবর্তী। (সূরা বাকারা,২১৪)।

 

أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تُتْرَكُوا وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جٰهَدُوا مِنكُمْ وَلَمْ يَتَّخِذُوا مِن دُونِ اللَّهِ وَلَا رَسُولِهِۦ وَلَا الْمُؤْمِنِينَ وَلِيجَةً ۚ وَاللَّهُ خَبِيرٌۢ بِمَا تَعْمَلُونَ

তোমরা কি মনে কর যে, তোমাদের ছেড়ে দেয়া হবে এমনি, যতক্ষণ না আল্লাহ জেনে নেবেন তোমাদের কে যুদ্ধ করেছে এবং কে আল্লাহ, তাঁর রসূল ও মুসলমানদের ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করা থেকে বিরত রয়েছে। আর তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত। (সুরা তাওবা,১৬)

لَتُبْلَوُنَّ فِىٓ أَمْوٰلِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ وَلَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتٰبَ مِن قَبْلِكُمْ وَمِنَ الَّذِينَ أَشْرَكُوٓا أَذًى كَثِيرًا ۚ وَإِن تَصْبِرُوا وَتَتَّقُوا فَإِنَّ ذٰلِكَ مِنْ عَزْمِ الْأُمُورِ

অবশ্য ধন-সম্পদে এবং জনসম্পদে তোমাদের পরীক্ষা হবে এবং অবশ্য তোমরা শুনবে পূর্ববর্তী আহলে কিতাবদের কাছে এবং মুশরেকদের কাছে বহু অশোভন উক্তি। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর এবং পরহেযগারী অবলম্বন কর, তবে তা হবে একান্ত সৎসাহ ব্যাপার। (সূরা আলে ইমরান, ১৮৬)

 

إِذْ جَآءُوكُم مِّن فَوْقِكُمْ وَمِنْ أَسْفَلَ مِنكُمْ وَإِذْ زَاغَتِ الْأَبْصٰرُ وَبَلَغَتِ الْقُلُوبُ الْحَنَاجِرَ وَتَظُنُّونَ بِاللَّهِ الظُّنُونَا۠ (10) هُنَالِكَ ابْتُلِىَ الْمُؤْمِنُونَ وَزُلْزِلُوا زِلْزَالًا شَدِيدًا (11(

যখন তারা তোমাদের নিকটবর্তী হয়েছিল উচ্চ ভূমি ও নিম্নভূমি থেকে এবং যখন তোমাদের দৃষ্টিভ্রম হচ্ছিল, প্রাণ কষ্ঠাগত হয়েছিল এবং তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে নানা বিরূপ ধারণা পোষণ করতে শুরু করছিলে। সে সময়ে মুমিনগণ পরীক্ষিত হয়েছিল এবং ভীষণভাবে প্রকম্পিত হচ্ছিল। (সূরা আহজাব, ১০-১১)

 

فقد صح أن رجلاً أتى إلى انبي فقال: والله يا رسول الله إني أحبك، فقال له رسول الله :” إن البلايا أسرع إلى من يحبني من السيل إلى منتهاه “.

বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত , জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট এসে বলল : হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনাকে ভালবাসি। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাকে বললেন; স্রোত গন্তব্যের দিকে যত দ্রুত ধাবিত হয়, যারা আমাকে ভালবাসে, তাদের দিকে বিপদাপদ তার চেয়েও দ্রুত ধাবিত হয়। (ইবনে হিব্বান আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ: ১৫৮৬)

وأكثر الناس حبا الله تعالى وللنبيه أكثرهم بالاء في الله .. وأكثرهم اتباعا لمنهاجه وسنته وسيرته، وتخلقاً ، كما قال تعالى: قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِى يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ

আর যারা আল্লাহ ও তার নবীকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসে, তারাই আল্লাহর পথে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার সম্মুখীন হয় এবং তারাই তাঁর নীতি, আদর্শ ও জীবনীর সবচেয়ে বেশি অনুসরণ করে এবং সবচেয়ে বেশি তার চরিত্রে চরিত্রবান হয়। যেমনটা আল্লাহ তা’আলা বলেছেন: “বল, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাসো, তবে আমার অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন।”

 

وقال:” أشد الناس بلاء الألنبياء ثم الأمثل فلأمثل، يبتلى الرجل على حسب دينه فإن كان في دينه صلباً اشتد بلاؤه، وإن كان في دينه رقة ابتلي على حسب دينه، فما يبرح البلاء بالعبد حتى يتركه يمشي على الأرض ما عليه خطيئة “.

রাসূলুল্লাহ ﷺ আরো বলেন:

“মানুষের মধ্যে সর্বাধিক বিপদাপদের সম্মুখীন হন নবীগণ, তারপর তাদের সর্বাধিক অনুসরণকারীগণ, তারপর তারপরের স্তরের লোকগণ… এভাবে। প্রতিটি লোককে তার দ্বীনদারি অনুযায়ী পরীক্ষা করা হয়। তাই কেউ যদি স্বীয় দ্বীনে মজবুত হয়, তাহলে তার পরীক্ষাও কঠিন হয়।

আর কেউ যদি স্বীয় দ্বীনে দুর্বল হয়, তাকে তার দ্বীন অনুযায়ীই পরীক্ষা করা হয়। এভাবে একজন বান্দার উপর বিপদাপদ আসতে থাকে, যতক্ষণ না তাকে এ পর্যায়ে পৌঁছায় যে, সে পৃথিবীর উপর এমনভাবে হাটতে থাকে, যে তার কোন গুনাহই থাকে না।” (তিরমিজি, সিলসিলাতুস সাহিহা ১৪৩)

وقال :عن نفسه:”ما أوذي أحد ما أوذيت في الله عز وجل “.

তিনি নিজের ব্যাপারে বলেন, আমাকে আল্লাহর পথে যত কষ্টের শিকার দেওয়া হয়েছে, কেউ এত কষ্টের শিকার হয়নি। (সিলসিলাতুস সাহিহা ২২২২২)

وقال :”كما يضاعف لنا الأجر، كذلك يضاعف علينا البلأ “.

তিনি আরও বলেন: যেমনিভাবে আমাদের বিনিময় বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়, তেমনিভাবে আমাদের বিপদাপদও বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। (সিলসিলাতুস সহিহা ২০৪৭)

وقال  :” إن الصالحين يشدد عليهم، وإنه لا يصيب مؤناً نكبة من شوكة فما فوق ذلك، إلا حُطت بها عنه خطيئة، ورفع بها درجة “.

তিনি আরও বলেন; “নিশ্চয়ই নেককারদের উপর কঠিন বিপদ দেওয়া হয়। আর মুমিন বান্দার উপর কাঁটা বা তার চেয়ে নগণ্য পিরমাণ মত বিপদ আসে, তার প্রতিটির জন্য তার গুনাহ ক্ষমা করা হয় এবং তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়।” (তাবারানি, সিলসিলাতুস সাহিহা ১৬১০)

ِ وقال :”إن عظم الجزاء مع عظم البلأ، وإن الله إذا أحب قوماً ابتلاهم، فمن رضي فله الرضى ومن سخط فله السخط

তিনি আরও বলেন; নিশ্চয়ই বড় প্রতিদান বড় পরীক্ষার সাথেই। আল্লাহ যখন কোন সম্প্রদায়কে ভালবাসেন, তখন তাদেরকে পরীক্ষায় ফেলেন। অতঃপর যে তাতে সন্তুষ্ট থাকে, তার জন্য থাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি আর যে তাতে অসন্তুষ্ট হয়, তার জন্য থাকে আল্লাহর অসন্তুষ্টি। (তিরমিজি, ইবনে মাযাহ, সিলসিলাতুস সাহিহা ১৪৬)

 

সবর

الابتالأ هو فرق بين المؤمن والمنافق:

বিপদ আপদই মুমিন ও মুনাফিকের মাঝে পার্থক্যকারী

 

إِن يَمْسَسْكُمْ قَرْحٌ فَقَدْ مَسَّ الْقَوْمَ قَرْحٌ مِّثْلُهُۥ ۚ وَتِلْكَ الْأَيَّامُ نُدَاوِلُهَا بَيْنَ النَّاسِ وَلِيَعْلَمَ اللَّهُ الَّذِينَ ءَامَنُوا وَيَتَّخِذَ مِنكُمْ شُهَدَآءَ ۗ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الظّٰلِمِينَ

তোমরা যদি আহত হয়ে থাক, তবে তারাও তো তেমনি আহত হয়েছে। আর এ দিনগুলোকে আমি মানুষের মধ্যে পালাক্রমে আবর্তন ঘটিয়ে থাকি। এভাবে আল্লাহ জানতে চান কারা ঈমানদার আর তিনি তোমাদের কিছু লোককে শহীদ হিসাবে গ্রহণ করতে চান। আর আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেন না। (সুরা আলে ইমরান, ১৪০)

 

وَمَآ أَصٰبَكُمْ يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعَانِ فَبِإِذْنِ اللَّهِ وَلِيَعْلَمَ الْمُؤْمِنِينَ

আর যেদিন দু’দল সৈন্যের মোকাবিলা হয়েছে; সেদিন তোমাদের উপর যা আপতিত হয়েছে তা আল্লাহ’র হুকুমেই হয়েছে এবং তা এজন্য যে, তাতে ঈমানদারদিগকে জানা যায়। এবং তাদেরকে যাতে সনাক্ত করা যায় যারা মুনাফিক ছিল। (সুরা আলে ইমরান, ১৬৬)

 

وَمِنَ النَّاسِ مَن يَقُولُ ءَامَنَّا بِاللَّهِ فَإِذَآ أُوذِىَ فِى اللَّهِ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ كَعَذَابِ اللَّهِ وَلَئِن جَآءَ نَصْرٌ مِّن رَّبِّكَ لَيَقُولُنَّ إِنَّا كُنَّا مَعَكُمْ ۚ أَوَلَيْسَ اللَّهُ بِأَعْلَمَ بِمَا فِى صُدُورِ الْعٰلَمِينَ (10) وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ ءَامَنُوا اتَّبِعُوا سَبِيلَنَا وَلْنَحْمِلْ خَطٰيٰكُمْ وَمَا هُم بِحٰمِلِينَ مِنْ خَطٰيٰهُم مِّن شَىْءٍ ۖ إِنَّهُمْ لَكٰذِبُونَ (11(

কতক লোক বলে, আমরা আল্লাহ’র উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি; কিন্তু আল্লাহ’র পথে যখন তারা নির্যাতিত হয়, তখন তারা মানুষের নির্যাতনকে আল্লাহ’র আযাবের মত মনে করে। যখন আপনার পালনকর্তার কাছ থেকে কোন সাহায্য আসে তখন তারা বলতে থাকে, আমরা তো তোমাদের সাথেই ছিলাম। বিশ্ববাসীর অন্তরে যা আছে, আল্লাহ কি তা সম্যক অবগত নন?

আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং নিশ্চয় জেনে নেবেন যারা মুনাফেক। (সুরা আনকাবুত, ১০-১১)

 

وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ حَتّٰى نَعْلَمَ الْمُجٰهِدِينَ مِنكُمْ وَالصّٰبِرِينَ وَنَبْلُوَا أَخْبَارَكُمْ

আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যে পর্যন্ত না ফুটিয়ে তুলি তোমাদের জিহাদকারীদেরকে এবং সবরকারীদেরকে এবং যতক্ষণ না আমি তোমাদের অবস্থানসমূহ যাচাই করি। (সূরা মুহাম্মাদ, ৩১)

 

وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَىْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوٰلِ وَالْأَنفُسِ وَالثَّمَرٰتِ ۗ وَبَشِّرِ الصّٰبِرِينَ (155) الَّذِينَ إِذَآ أَصٰبَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُوٓا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّآ إِلَيْهِ رٰجِعُونَ (156) أُولٰٓئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوٰتٌ مِّن رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ ۖ وَأُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُونَ (157(

এবং অবশ্যই আমি তোমাদিগককে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের।

যখন তারা বিপলে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জনা এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো।

তারা সে সমস্ত লোক, যাদের প্রতি আল্লাহ্’র অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েত প্রাপ্ত। (সুরা বাকারা , ১৫৫-১৫৭)

 

إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقٰمُوا فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ (13) أُولٰٓئِكَ أَصْحٰبُ الْجَنَّةِ خٰلِدِينَ فِيهَا جَزَآءًۢ بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ (14(

নিশ্চয় যারা বলে , আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ অতঃপর অবিচল থাকে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিত হবে না। তারাই জান্নাতের অধিকারী। তারা তথায় চিরকাল থাকবে। তারা যে কর্ম করত, এটা তারই প্রতিফল। (সুরা আহকাফ, ১৩-১৪)

 

ﺑﺴــــــــــﻢﷲﺍﻟﺮﺣﻤﻦﺍلرﺣﻴﻢ

وَٱلْعَصْرِ (1) إِنَّ ٱلْإِنسَٰنَ لَفِى خُسْرٍ  (2)  إِلَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَتَوَاصَوْا۟ بِٱلْحَقِّ وَتَوَاصَوْا۟ بِٱلصَّبْرِ (3(

“সময়ের শপথ; নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের। (সুরা আসর, ১-৩)

 

إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقٰمُوا تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمُ الْمَلٰٓئِكَةُ أَلَّا تَخَافُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَبْشِرُوا بِالْجَنَّةِ الَّتِى كُنتُمْ تُوعَدُونَ (30) نَحْنُ أَوْلِيَآؤُكُمْ فِى الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَفِى الْءَاخِرَةِ ۖ وَلَكُمْ فِيهَا مَا تَشْتَهِىٓ أَنفُسُكُمْ وَلَكُمْ فِيهَا مَا تَدَّعُونَ (31(

নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে, তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শোন। ইহকালে ও পরকালে আমরা তোমাদের বন্ধু।

সেখানে তোমাদের জন্য আছে যা তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্যে আছে তোমরা দাবী কর। (সুরা ফুসসিলাত, ৩০-৩১)

 

وَكَأَيِّن مِّن نَّبِىٍّ قٰتَلَ مَعَهُۥ رِبِّيُّونَ كَثِيرٌ فَمَا وَهَنُوا لِمَآ أَصَابَهُمْ فِى سَبِيلِ اللَّهِ وَمَا ضَعُفُوا وَمَا اسْتَكَانُوا ۗ وَاللَّهُ يُحِبُّ الصّٰبِرِينَ (146) وَمَا كَانَ قَوْلَهُمْ إِلَّآ أَن قَالُوا رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِىٓ أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكٰفِرِينَ (147) فَـَٔاتٰىهُمُ اللَّهُ ثَوَابَ الدُّنْيَا وَحُسْنَ ثَوَابِ الْءَاخِرَةِ ۗ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ (148(

আর বহু নবী ছিলেন, যাঁদের সঙ্গী-সাথীরা তাঁদের অনুবর্তী হয়ে জিহাদ করেছে; আল্লাহর পথে-তাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু আল্লাহর রাহে তারা হেরেও যায়নি, ক্লান্ত ও হয়নি এবং দমেও যায়নি। আর যারা সবর করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন।

তারা আর কিছুই বলেনি-শুধু বলেছে, হে আমাদের পালনকর্তা! মােচন করে দাও আমাদের পাপ এবং যা কিছু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে আমাদের কাজে। আর আমাদিগকে দৃঢ় রাখ এবং কাফেরদের উপর আমাদিগকে সাহায্য কর।

অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়ার সওয়াব দান করেছেন এবং যথার্থ আখেরাতের সওয়াব। আর যারা সৎকর্মশীল আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন। (সুরা আলে-ইমরান, ১৪৬-১৪৮)

 

وَإِذِ ابْتَلٰىٓ إِبْرٰهِۦمَ رَبُّهُۥ بِكَلِمٰتٍ فَأَتَمَّهُنَّ ۖ قَالَ إِنِّى جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ إِمَامًا ۖ

যখন ইব্রাহীমকে তাঁর পালনকর্তা কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা করলেন, অতঃপর তিনি তা পূর্ণ করে দিলেন, তখন পালনকর্তা বললেন, আমি তোমাক মানবজাতির নেতা করব। (সুরা বাকারা, ১২৪)

 

وَمِنَ النَّاسِ مَن يَعْبُدُ اللَّهَ عَلٰى حَرْفٍ ۖ فَإِنْ أَصَابَهُۥ خَيْرٌ اطْمَأَنَّ بِهِۦ ۖ وَإِنْ أَصَابَتْهُ فِتْنَةٌ انقَلَبَ عَلٰى وَجْهِهِۦ خَسِرَ الدُّنْيَا وَالْءَاخِرَةَ ۚ ذٰلِكَ هُوَ الْخُسْرَانُ الْمُبِينُ

মানুষের মধ্যে কেউ কেউ দ্বিধা-দ্বন্দ্বে জড়িত হয়ে আল্লাহ’র এবাদত করে। যদি সে কল্যাণ প্রাপ্ত হয়, তবে এবাদতের উপর কায়েম থাকে এবং যদি কোন পরীক্ষায় পড়ে, তবে পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়। সে ইহকালে ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত। এটাই প্রকাশ্য ক্ষতি। (সুরা হাজ্জ, ১১)

 

ومن قصة أصحاب الألخدود، أن الطاغية لما رأى الناس قد آمنوا باللّٰه رب العالمين، وحصل ما كان يخشاه ويكرهه ”  أمر بالأخدود بأفواه السكك فخدت وأضرم فيها النيران،

وقال: من لم يرجع عن دينه فاقحموه فيها، أو قيل له: اقتحم، ففعلوا حتى جاءت امرأة ومعها صبي لها فتقاعست أن تقع فيها، فقال لها الغلام: يا أمه اصبري فإنك على الحق ” مسلم.

আসহাবুল উখদুদের কাহিনীতে রয়েছে, তাগুত শাসক যখন দেখল, মানুষ বিশ্বজগতের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান এনে ফেলেছে এবং সে যার আশংকা করছিল ও যা অপছন্দ করছিল তা-ই ঘটে গেছে, তখন সে সড়কের মুখে মুখে গর্ত খননের আদেশ করল। কথামত গর্ত খুড়ে তাতে আগুন প্রজ্জ্বলিত করা হল। তারপর বলল; যে দ্বীন থেকে ফিরে না আসবে, তাকে তাতে নিক্ষেপ করবে। ফলে তার সৈন্যবাহিনী তাই করতে লাগল।

এক পর্যায়ে একজন মহিলার পালা আসল, তার সাথে ছিল তার ছোট্ট শিশু। তাই মহিলাটি তাতে নিক্ষিপ্ত হতে গড়িমসি করছিল। তখন উক্ত শিশু বলে উঠল: হে মা! অবিচল থাকুন, কারণ আপনি হকের উপর আছেন। (মুসলিম)

এদের ব্যাপারে এবং এদের মত অন্যান্য লোকদের ব্যাপারেই আল্লাহ তাআলা বলেন:

فيهم وفي أمثالهم يقول تعالى: وَمِنَ النَّاسِ مَن يَعْبُدُ اللَّهَ عَلٰى حَرْفٍ ۖ فَإِنْ أَصَابَهُۥ خَيْرٌ اطْمَأَنَّ بِهِۦ ۖ وَإِنْ أَصَابَتْهُ فِتْنَةٌ انقَلَبَ عَلٰى وَجْهِهِۦ خَسِرَ الدُّنْيَا وَالْءَاخِرَةَ ۚ ذٰلِكَ هُوَ الْخُسْرَانُ الْمُبِينُ

মানুষের মধ্যে কেউ কেউ দ্বিধা-দ্বন্দ্বে জড়িত হয়ে আল্লাহর ইবাদত করে। যদি সে কল্যাণ প্রাপ্ত হয়, তবে ইবাদতের উপর কায়েম থাকে এবং যদি কোন পরীক্ষায় পড়ে, তবে পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়। সে ইহকালে ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত। এটাই প্রকাশ্য ক্ষতি। (সূরা হাজ্জ, ১১)

 

وفي الحديث عن جابر بن عبد الله، قال: كنا جلوسا عند النبي ، فخط خطا هكذا أمامه، فقال: ”هذا سبيل اهلل عز وجل “، وخط خطا عن يمينه، وخط خطأ عن شماله، وقال:” هذه سبل الشيطان ” ثم وِأنَّ هَذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيماً فَاتَّبِعُوهُ وَلا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ وضع يده في الخط الأوسط ثم تال هذه الآية: فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَن سَبِيلِهِۦۚ ذَٰلِكُمْ وَصَّىٰكُم بِهِۦ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

হাদিসে জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে: আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট বসা ছিলাম। তিনি তার সামনে একটি রেখা আঁকলেন এভাবে। তারপর বললেন; এটা হল আল্লাহর পথ। তারপর তার ডান দিকে একটি রেখা টানলেন এবং বাম দিকে একটি রেখা টানলেন। অতঃপর বললেন; এগুলো হল শয়তানের পথ। তারপর মাঝের রেখাটিতে তার হাত রেখে তেলাওয়াত করলেন;

 অর্থ: “নিশ্চয়ই এটাই আমার সরল পথ। তাই তোমরা এরই অনুসরণ করো। অন্যান্য বহু পথের অনুসরণ করো না। তাহলে তা তোমাদেরকে তার পথ থেকে বিচ্যুত করবে। তিনি তোমাদেরকে এই উপদেশ দিচ্ছেন, যেন তোমরা ভয় করো।

 

وقال تعالى: [إِنَّ ٱلَّذِينَ قَالُوا۟ رَبُّنَا ٱللَّهُ ثُمَّ ٱسْتَقَٰمُوا۟] قال أبو بكر الصديق (رض.): فلم يلتفتوا عنه يمنة ولا يسرة.

আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন: “নিশ্চয়ই যারা বলেছে আমাদের রব আল্লাহ, অতঃপর অটল থেকেছে… আবু বকর সিদ্দিক রা: বলেন; অতঃপর তার থেকে ডানে বামে ঘাড় ফিরায়নি। (আল-মুতাওয়া, ৩২/২৮)

 

ومن الانبياء. عليهم الصلاة والسلام . من استمر في دعوته السنين الطوال فما آمن معه  إلال قليل من الناس، كما قال تعالى عن نوح ، الذي ظل يدعو قومه ما يزيد عن تسعمائة عام، فكانت النتيجة كما قال تعالى: [وَمَآ ءَامَنَ مَعَهُۥٓ إِلَّا قَلِيلٌ] هود: بل إن من الانبياء من لا يؤمن به إلا الرجل الواحد، كما قال: ”إن من الأنبياء نبياً ما يصدقه من أمته إلا رجل واحد

নবীদের মধ্যে এমন অনেক নবীও অতিবাহিত হয়েছেন, যারা দীর্ঘ বছর দাওয়াত চালিয়ে যান। কিন্তু অল্পসংখ্যক লোকই তাদের সাথে ঈমান আনে। যেমন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা নূহ আ: সম্পর্কে বলেন; যিনি তার কওমকে ৯ শত বৎসরের অধিক দাওয়াত দেন। কিন্তু ফলাফল ছিল যেমনটি আল্লাহ ﷻ বলেন , তার সাথে অল্পসংখ্যক লোকই ঈমান এনেছিল। বরং এমন নবীও অতিবাহিত হয়েছেন, যার সাথে মাত্র এক ব্যক্তি ঈমান এনেছে। যেমন নবী ﷺ বলেছেন; এমন নবীও আছেন, যাকে তার উম্মতের মাত্র একজন বিশ্বাস করেছে। (মুসলিম, সহিহ আল-জামে)

وقال: ”أشد الناس بلاءً الأنبياء ثم الصالحون، وإنكان أحدهم يفرح بالبلاء كما يفرح أحدكم بالرخاء“.

তিনি আরও বলেন; মানুষের মধ্যে সর্বাধিক পরীক্ষার সম্মুখীন হন নবীগণ, তারপর নেককারগণ। আর তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যের মধ্যে যতটা আনন্দিত হও, তারা বিপদাপদে ততটা আনন্দিত হয়। (ইবনে মাজাহ, সিলসিলাতুস সাহিহা, ১৪৪)

 

وَلَمَّا رَءَا ٱلْمُؤْمِنُونَ ٱلْأَحْزَابَ قَالُوا۟ هَٰذَا مَا وَعَدَنَا ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَصَدَقَ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥۚ وَمَا زَادَهُمْ إِلَّآ إِيمَٰنًا وَتَسْلِيمًا

যখন মুমিনরা শত্রুবাহিনীকে দেখল, তখন বলল, আল্লাহ ও তাঁর রসূল এরই ওয়াদা আমাদেরকে দিয়েছিলেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল সত্য বলেছেন। এতে তাদের ঈমান ও আত্মসমর্পণই বৃদ্ধি পেল। (সুরা আহযাব, ২২)

 

ٱلَّذِينَ قَالَ لَهُمُ ٱلنَّاسُ إِنَّ ٱلنَّاسَ قَدْ جَمَعُوا۟ لَكُمْ فَٱخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَٰنًا وَقَالُوا۟ حَسْبُنَا ٱللَّهُ وَنِعْمَ ٱلْوَكِيلُ

যাদেরকে লোকেরা বলেছে যে, তোমাদের সাথে মোকাবেলা করার জন্য লোকেরা সমাবেশ করেছে বহু সাজ সরঞ্জাম; তাদের ভয় কর। তখন তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর হয়ে যায় এবং তারা বলে, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট; কতই না চমৎকার কামিয়াবী দানকারী। (সুরা আলে-ইমরান, ১৭৩)

 

(Visited 1,938 times, 1 visits today)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − four =