বন্দিগণ : বিস্মৃত ব্যাক্তিবর্গ

হাসান আব্দুস সালাম

বর্তমানে অবহেলিত যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে মুসলিম জাতির জাগ্রত ও উদ্বিগ্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরী, তা হলো বন্দী মুসলিমদের বিষয়।

বিশেষত তাদের মধ্যে রয়েছেন মুজাহিদ, দায়ী ও সম্মানিত উলামায়ে কেরাম যারা সত্যকে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, মিথ্যা ও বাতিলদের মুখোশ উন্মোচন করেছিলেন এবং আল্লাহর শত্রুদের প্রতিহত করছিলেন।

আজ তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসঘাতক, মুরতাদ শাসকের  কারাগারে বন্দী। সেই ভয়াবহ কারাগারের প্রকোষ্ঠে চলছে তাদের উপর পাশবিক নির্যাতন ও অপমান।

হে মুসলিম উম্মাহ!! আপনারা কি মনে করেন যে, মুসলিমদের জন্য কারাগারে বন্দি হওয়া স্বাভাবিকভাবেই আপতিত হওয়া সাধারণ কোনো মুসিবতের মত?? সুবহানআল্লাহ! এমনটা সঙ্গত নয় যে, মুমিনদের উন্নত অংশটিকে এমন নাজেহাল অবস্থায় দেখা সত্ত্বেও আপনারা চুপচাপ থাকবেন এবং আরামদায়ক জীবনযাপন করবেন বা মনোরম সময় কাটাবেন।

কাফের-মুরতাদদের কারাগারে শত শত মুসলিম যুবক ও আলেম-উলামা বন্দি, তাদের একমাত্র অন্যায় হলো- তারা একথার স্বীকৃতি দিয়েছিলেন এবং নিজ জবান ও জীবন দিয়ে তার সপক্ষে দাড়িয়েছিলেন যে- আমাদের রব আল্লাহ তায়ালা!!

{وَمَا نَقَمُوا مِنْهُمْ إِلَّا أَنْ يُؤْمِنُوا بِاللَّهِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ}
তারা তাদের (মুমিনদের) থেকে প্রতিশোধ নিয়েছিল শুধুমাত্র এই অপরাধে যে, তারা অসীম ক্ষমতাবান প্রশংসিত আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল।
(সূরা বুরুজঃ ৮)

এত কিছুর পরও মুসলিম উম্মাহ ঐসব বন্দীদের  ব্যাপারে উদাসীন এবং তাদের উপর আপতিত জুলুম নির্যাতনের ব্যাপারে একেবারেই অমনোযোগী; তবে বিশেষ কিছু বান্দা ছাড়া, যাদের উপর আল্লাহর বিশেষ রহমত রয়েছে।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়,  যেন ঐসব বন্দী মুসলিম যুবক ও উলামাগণ এই উম্মাহর সন্তান নন এবং নিজ মুসলিম ভাইদের উপর তাদের কোনো অধিকার নেই!!

হে মুসলিম উম্মাহ!! কিভাবে তোমরা স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করছো, আর মজলুম বন্দীদের ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছো??

এটা কিভাবে বৈধ হতে পারে?? অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ-
{إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ}،
নিশ্চয় সকল মুমিন একে অপরের ভাই।”
(সূরা হুজরাতঃ ১০)

তিনি আরো বলেনঃ-
{وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ}
“মুমিনগণ একে অপরের বন্ধু/অভিভাবক।”
(সূরা তাওবাঃ ৭১)

হে মুসলিম উম্মাহ!!  কিভাবে তোমরা স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করছো,  আর মজলুম বন্দীদের ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছো??, এটা কিভাবে বৈধ হতে পারে??
অথচ তোমাদের নবী বলেছেনঃ-
أطعموا الجائعَ، وعُودوا المريضَ، وفُكُّوا العَاني)؛
“তোমরা ক্ষুধার্তদেরকে পানাহার দাও, রোগীকে চিকিৎসা দাও, আর বন্দীদের মুক্ত কর।” (সহিহ বুখারী)

হাদিসের العَاني (আল আনি) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো أسير তথা বন্দী।

রাসূল (সঃ) আরো বলেনঃ-
(إنَّ على المسلمين من فيئهم أن يُفادوا أسيرهم، ويؤدوا عن غارِمهم).
মুসলিমদের উপর অর্পিত দায়িত্ব হলো-
১.তাদের বন্দী ভাইকে মুক্ত করা,
২.তাদের ঋণ পরিশোধের ব্যাবস্থা করা।”
(সুনানে সাঈদ ইবনে মানসুর)

তিনি (সঃ) আরো বলেনঃ-
وقال صلى الله عليه وسلم: (ما من امرئٍ يَخذُلُ امرءاً مُسلماً في موطنٍ يُنتقصُ فيه عِرضهِ، ويُنتهكُ فيه من حُرمَتِه، إلا خذَلَه اللهُ تعالى في موطنٍ يُحبُّ فيه نصرَتَهُ، وما مِن أحدٍ ينصرُ مُسلماً في موطنٍ يُنتقَصُ فيه من عِرضهِ، ويُنتهكُ فيه من حُرمتِه، إلا نصرَهُ اللهُ في موطنٍ يُحبُّ فيه نصرتَهُ).
যে ব্যক্তি তার কোন মুসলিম ভাইকে এমন স্থানে পরিত্যাগ করল, যেখানে তার সম্মান হরণ করা হচ্ছে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তাকেও এমন স্থানে পরিত্যাগ করবেন যেখানে সে সাহায্যের মুখাপেক্ষী হবে।
আর যে তার মুসলিম ভাইকে এমন স্থানে সাহায্য করল, যেখানে তাঁর সম্মান নষ্ট করা হচ্ছে, তাহলে আল্লাহ তা আলাও তাকে এমন স্থানে সাহায্য করবেন যেখানে তার সাহায্যের প্রয়োজন হবে।”
(আহমদ, ১৬৪১৫ আবু দাউদ, ৪৮৮৪)

আর এর চেয়ে সর্বোচ্চ خذلان তথা ‘পরিত্যাগ করা’ আর কী হতে পারে যে- উম্মাহ তার ক্লান্তিলগ্নে ও সংকটের সময় এগিয়ে আসা সন্তানদের আন্তরিকতা থেকে বঞ্চিত করে, যারা তাদের দ্বীন ও তার হুরমত রক্ষার্থে সবকিছুর ঝুঁকি নিয়েছিল !?

রাসূল (সঃ) বলেনঃ-
وقال صلى الله عليه وسلم: (مَنْ نصَرَ أخاهُ بالغيبِ نصَرَهُ اللهُ في الدنيا والآخرة).
যে ব্যাক্তি তার মুসলিম ভাইকে তার অনুপস্থিতিতে সাহায্য করবে, আল্লাহ তা’আলাও তাকে দুনিয়া-আখেরাত উভয় জাহানে সাহায্য করবেন।”
(বাইহাকি)

হে মুসলিম উম্মাহ!! কিভাবে তোমরা স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করছো, আর মজলুম বন্দীদের ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছো?? এটা কিভাবে বৈধ হতে পারে??
অথচ তোমাদের নবী বলেছেনঃ-
(المؤمنُ من أهلِ الإيمان بمنزلة الرأسِ من الجسد، يألَمُ المؤمنُ لما يُصيبُ أهلَ الإيمان، كما يألَمُ الرأسُ لما يصيبُ الجسدَ).
“ঈমানদার সকল মুমিন একটি দেহের মাথার ন্যায়, তাদের কোন এক ভাই যদি ব্যথা পায় তাহলে তারাও তার ব্যথায় ব্যথিত  হয়, যেমনিভাবে শরীরের কোন অংশে আঘাত পেলে তার মাথাও সেটা অনুভব করে।”
(মুসনাদে আহমদ, ৫/৩৪০; আস-সিলসিলাতুস সহিহা, ১১৩৭)

তিনি (সঃ) আরো বলেনঃ-
وقال صلى الله عليه وسلم: (المؤمنون كرجلٍ واحدٍ، إذا اشتكى رأسَهُ اشتكى كلُّه، وإن اشتكى عينَهُ اشتكى كلُّه).
সকল মুমিন একটি দেহের ন্যায়, (শরীরের) মাথার অংশ যদি ব্যথা পায়, তাহলে পুরো শরীর তা অনুভব করে অথবা তার চোখে যদি ব্যথা পায়, তো পুরো শরীর ব্যথিত হয়।” (সহিহ বুখারী)

রাসুলের বাণী المؤمنون (আল মুমিনুন) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো;  বর্ণ, গোত্র জন্মভূমি নির্বিশেষে সকল মুমিন, তারা পরস্পরের সহযোগী ও সহানুভূতিশীল হবে এমন একটি দেহের ন্যায়, যার কিছু অংশে কষ্ট পাবার দ্বারা অন্য অংশ ব্যাথিত হয় এবং এক অংশ অন্য অংশের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়। অথচ আমরা কি পরস্পরের জন্য এমন??

হে মুসলিম উম্মাহ!! কিভাবে তোমরা স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করছো,  আর মজলুম বন্দীদের ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছো??, এটা কিভাবে বৈধ হতে পারে??
অথচ তোমাদের নবী বলেছেনঃ-
(ترى المؤمنين في تراحُمِهم وتوادِّهم، وتعاطُفِهم، كمثلِ الجسدِ إذا اشتكى عضواً تداعى لهُ سائرُ الجسدِ بالسَّهرِ والحُمَّى).
তুমি মুমিনদেরকে দেখবে যে তারা পরস্পরে বন্ধুত্বতা ও সহানুভূতিশীলতার ক্ষেত্রে এমন একটি শরীরের ন্যায়, যার কোন অঙ্গ ব্যাথা পাওয়ামাত্রই পুরো শরীর অনিদ্রা ও জ্বরে ভোগে।” (সহিহ বুখারী)

অতএব আমাদের উচিত প্রত্যেকের নিজেকে জিজ্ঞাসা করা——— যাতে তার ঈমানের সত্যতা সম্পর্কে জানা যায় যে, সে ইসলাম ও মুমিনদের কাতারে রয়েছে কি না!
সে কি ঐসব লোকদের একজন, যারা মুসলিমদের উপর ও মুসলিমদের শহরগুলোতে বিপদ-দুর্দশা নেমে আসতে দেখে উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ হয়??
নাকি সে তাদের অন্তর্ভুক্ত যারা এসবের কোনো পরোয়াই  করেনা, বরং নিজের প্রভৃতি ও স্বার্থের পেছনে দৌড়ায়??।

হে মুসলিম উম্মাহ!! কিভাবে তোমরা স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করছো,  আর মজলুম বন্দীদের ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছো??, এটা কিভাবে বৈধ হতে পারে??
অথচ তোমাদের নবী বলেছেনঃ-
(مَن نَفَّسَ عن مُسلِمٍ كُربَةً من كُرَب الدنيا، نفَّسَ اللهُ عنه كُربةً من كُرَبِ الآخرةِ، واللهُ في عونِ العبدِ ما كان العبدُ في عونِ أخيه).
যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাই থেকে দুনিয়াবী একটি কষ্ট/বিপদ দূর করবে, আল্লাহ-তালা তার থেকে আখেরাতের একটি কষ্টকে দূর করে দেবেন। আর আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাকে ততক্ষণ সাহায্য করেন, যতক্ষণ সে তার ভাইকে সাহায্য করে। (সহিহ মুসলিম)।

বন্দীদের দুর্দশা ও কষ্ট দূর করার প্রচেষ্টার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো দুর্দশা ও কষ্ট দূরীকরণের প্রকল্প রয়েছে কি??
তার বন্দিত্বের কষ্ট কতই না তীব্র যে অত্যাচারী পাপিষ্ঠের অন্ধকার কারাগারে একাকী জীবন যাপন করছে।

রাসূল (সঃ) বলেনঃ-
وقال صلى الله عليه وسلم: (المسلمُ أخو المسلمِ لا يَظلِمْهُ ولا يُسْلِمه، ومن كان في حاجةِ أخيه، كان اللهُ في حاجته، ومن فرَّج عن مسلمٍٍ كُربةً فرَّجَ اللهُ عنه كُربةً من كُرَبِ يومِ القيامة).
এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই, সে তার প্রতি জুলুম করবে না এবং (কোনো জালিমের হাতেও) তাকে সোপর্দ করবেনা, যে ব্যাক্তি তার ভাইয়ের প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করবে, আল্লাহ তা’আলাও তার প্রয়োজন মিটিয়ে দিবেন।
আর যে তার মুসলিম ভাই থেকে একটি কষ্টকে দূর করার চেষ্টা করবে, আল্লাহ তাআলাও কেয়ামতের দিন তার থেকে একটি কষ্টকে দূর করে দিবেন।”
(সহিহ মুসলিম)

রাসূল (সঃ) এর  এই বাক্য  (لا يَظلِمهُ ولا يُسْلِمه)؛ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো; কোন মুসলিম তার ভাইকে অত্যাচারীর হাতে সোপর্দ করতে পারে না বরং সে সর্বদা এই প্রচেষ্টায় লিপ্ত থাকবে যে, কিভাবে জালিমদের  হাত থেকে তার (দ্বীনি) ভাইদের উদ্ধার করা যায়।

হে মুসলিম জাতি!! তোমরা নিজেরাই তো এটা কামনা করো যে, মুজাহিদ, উলামায়ে কেরাম ও দায়ীগন  প্রকাশ্যে সত্য প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করুক এবং পালন করুক তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব।

অতঃপর তারা যখন তাদের দায়িত্ব পালন করতে শুরু করে তখন তাদের উপর আপতিত হয় হাজারো বালা-মুসিবত। পরিশেষে তাদের আবদ্ধ করা হয় তাগুত শাসকের গহীন অন্ধকার কারাগারে,—— আর ঐ অবস্থায় তোমরা তাদের থেকে পৃথক হয়ে তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করো, এমনকি তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসতেও অস্বীকৃতি জানাও। কেমন যেন তোমরা তাদেরকে চেনোই না এবং তোমাদের উপর তাদের কোন অধিকারও নেই।

تِلۡکَ  اِذًا  قِسۡمَۃٌ  ضِیۡزٰی
এটা তো অসম বন্টন/অন্যায়।
(সূরা নাজমঃ ২২)

অতএব ইসলামকে যে কোন প্রকারের সাহায্য করতে সকল মুসলমান ও সক্রিয় আলেম সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।

হে আল্লাহর বান্দা!! তোমার সামনে কল্যাণের একটি দরজা উন্মুক্ত হয়ে আছে, অতএব সেটা বন্ধ হবার পূর্বেই মূল্যায়ন করো, অন্যথায় বহু কল্যাণ হতে বঞ্চিত হবে।
আর সেই উন্মুক্ত দরজাটি হলো বন্দীদের এবং তাদের পরিবার-পরিজন, সন্তানাদির প্রয়োজন পূরণে সচেষ্ট থাকা।
অতএব যে তা বন্ধ হওয়ার পূর্বেই তার মূল্যায়ন করে তাকে অভিনন্দন, আর যে তার মূল্যায়ন করলো না সে অচিরেই অনুশোচনা করবে।

এছাড়াও স্মর্তব্য যে, ইমরান বিন হুসাইন হতে সহিহ সূত্রে বর্ণিতঃ-
(أنَّ رسولَ الله صلى الله عليه وسلم فدى رجلين من المسلمين برجلٍ مشرك).
রাসুল সাঃ একজন মুশরিকের মোকাবেলায় দুজন মুসলিমকে বন্দী মুক্ত করেছিলেন।”
(তিরমিজি)

হে আল্লাহ, হে চিরঞ্জিব, হে শক্তিধর, হে মহিমাময় ও সম্মানের অধিকারী, আমরা আপনার কুদরত ও রহমতের ওসিলায় আপনার নিকট কামনা করি যে,

আপনি সকল ভূখণ্ডের মুসলিম বন্দীদের উদ্ধার করে দিন, তাদের কষ্টকে লাঘব করুন, এবং অবিলম্বে  তাদেরকে স্বপরিবার, সন্তানাদি ও প্রিয়জনদের সাথে পুনরায় একত্রিত করে দিন, তাদেরকে হকের উপর অটল রাখুন এবং তাদের অন্তরে প্রশান্তি দান করুন, আর জালিমদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন। তাদের মধ্যে আমাদের জন্য অলৌকিক নিদর্শন দেখিয়ে দিন।

হে আমাদের রব!! নিশ্চয়ই আপনিই সর্বশ্রোতা, অতি নিকটবর্তী এবং আমাদের দুয়ার উত্তরদাতা।

সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সঃ) এর উপর, তার সাথীবর্গ ও পরিবার-পরিজনের উপর।

এবং আমাদের সর্বশেষ কথা হলো, সকল প্রশংসা শুধুমাত্র জগতসমূহের রব আল্লাহর জন্য।

(Visited 284 times, 1 visits today)